সারসংক্ষেপঃ পৃথিবীতে সংঘটিত সকল যুদ্ধেই যুদ্ধকবলিত দেশের মানুষ তিনটি বিশেষ দলে ভাগ হয়ে যায়। এর প্রথম দলÑ প্রতিরোধ গড়ে তোলার, দ্বিতীয় দল আক্রমণের শিকার এবং তৃতীয় দল দ্বিধাগ্রস্থের। উপন্যাস খেলাঘর-এ দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী ঘটনা নিয়ে কাহিনি বিন্যস্ত হয়ে উল্লিখিত তিনটি শ্রেণির মানুষকে লেখক উপস্থাপন করেছেন- তিনটি চরিত্রের মধ্য দিয়ে। রেহানা চরিত্রটি আক্রান্তদের, ইয়াকুব দ্বিধাগ্রস্থের এবং স্কুলমাস্টার মুকুল প্রতিরোধের দলভুক্ত। এখানে সবচেয়ে বেশি এবং নিশ্চিত যৌন-লোলুপতার শিকার নারী এবং এর জন্য দায়ী তার শরীর। আক্রান্ত নারীর মনঃস্তত্তে¡ বিকলন-উদ্ভূত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। মাহমুদুল হক এর খেলাঘর উপন্যাসে রেহানা তেমনি এক নারী চরিত্র। যদিও আক্রমণে উদ্ভূত বিকলনের চিত্র উপন্যাসে অনুপস্থিত, তদুপরি বিকলন-পরবর্তী রেহানার স্বপ্নময় কয়েকটি দিনের কথা জানা যায়- জানা যায়, ইয়াকুব নামের এক যুবকের সঙ্গে তার খেলাঘর গড়ে তোলার আশাব্যাঞ্জক কাহিনি। কিন্তু যুদ্ধে সর্বস্ব হারোনার দিকটি উন্মোচিত হলে, রেহানার অনেক সাধের খেলাঘর ভেঙে দুঃখময় পরিসমাপ্তির দিকে এগিয়ে যায়। উপন্যাসটিতে মাহমুদুল হক অত্যন্ত শৈল্পিকভাবে সেই খেলাঘর (১৯৯৮) ভেঙে যাওয়ার বৃত্তান্ত উপস্থাপন করেছেন। বাংলা উপন্যাস খেলাঘর-এ যুদ্ধপরবর্তী উল্লিখিত দিকগুলো বিশ্লেষণই আমাদের মূল উদ্দিষ্ট।
মূলশব্দঃ মুক্তিযুদ্ধ, খেলাঘর, ইয়াকুব, রেহেনা ।